জন্ম: ১৮৮৭ খ্রি: মৃত্যু: ১৯৫৪ খ্রি:
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পাতিলপাড়া গ্রামে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দ্বারকানাথ সেনগুপ্ত। যতীন্দ্রনাথ পেশায় ছিলেন একজন প্রকৌশলী। দুঃখকেই জীবনের চূড়ান্ত সত্য বলে জেনেছিলেন তিনি। মধ্যবিত্ত বাঙালি শ্রমজীবী মানুষের স্বপ্ন ও বাস্তবের সংঘাতকে তিনি কবিতায় তুলে ধরেছেন। কল্পনাবিলাস কিংবা ভাবালুতায় ছিল তাঁর চরম অবিশ্বাস। নতুন ধরনের কবিতা রচনা করে রবীন্দ্রনাথের অনুসারী কবিদের নতুন দৃষ্টি দিয়ে চারপাশের জগৎকে দেখার আহŸান জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এই নবীন দৃষ্টিভঙ্গি পরবর্তীকালের অনেক কবিকেই প্রভাবিত করেছিল। বিষয় ও গঠনের দিক থেকে তিনি কবিতাকে ঢেলে সাজাতে আগ্রহী ছিলেন। একেবারেই দৈনন্দিন জীবনের নানাকিছু যে শিল্পের সীমালঙ্ঘন না করেও অনায়াসে কাব্য-বিষয় হতে পারে তার পরিচয় রয়েছে তাঁর কাব্যে। সেই সঙ্গে তাঁর কাব্যে স্থান পেয়েছে গদ্যসুলভ শব্দ ও উপমার অভিনবত্ব। তাঁর কবিতার বক্তব্য যেমন সমকালীন সাহিত্যিকদের চমক লাগিয়েছিল তেমনি তাঁর বলার ভঙ্গি পাঠককে করেছিল মুগ্ধ। যতীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থ ‘মরীচিকা’। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘মরুশিখা’, ‘কুমারসম্ভব’, ‘মরুমায়া’, ‘সায়ম’, ‘ত্রিযামা’, ‘নিশান্তিকা’ প্রভৃতি। শেষ বয়সে তিনি ‘হ্যামলেট’, ‘ম্যাকবেথ’, ‘ওথেলো’, ‘কুমারসম্ভব’ প্রভৃতি চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ করেছিলেন।
তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।