জন্ম: ১৯১৮ খ্রি: মৃত্যু: ১৯৯৭ খ্রি:
বাংলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্যের অন্যতম খ্যাতিমান পুরুষ আবদুল হক। বর্তমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার উদয়নগর গ্রামে ১৯১৮ সালের ১০ অক্টোবর তাঁর জন্ম। তাঁর পিতার নাম সহিমুদ্দিন বিশ্বাস এবং মাতার নাম সায়েমা খাতুন। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তাঁকে শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে হয়েছে। তিনি কানসাট, টাঙ্গাইল, রাজশাহী ও কলকাতায় পড়াশোনা করেন। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পর তিনি সবশেষে বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
পাকিস্তান-পর্বে আবদুল হক বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা নিয়ে ক্ষ‚রধার লেখা লিখে ‘কলম-সৈনিক’ উপাধি লাভ করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে ১৯৪৭-পূর্বকালেই তিনি কলম ধরেন এবং এ বিষয়ক প্রথম লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পান। সরকারি কর্মচারী হয়েও বেনামে সরকারবিরোধী লেখায় তিনি যে সাহসিকতা প্রদর্শন করেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। মুক্তবুদ্ধি, বিজ্ঞানমনস্কতা, শানিত যুক্তি বক্তব্যের সাবলীল উপস্থাপন প্রভৃতি তাঁর রচনার বৈশিষ্ট্য। বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের তিনি এক যোগ্যউত্তরসুরি হিসেবে বিবেচিত হন। প্রবন্ধ রচনা ছাড়াও তিনি লিখেছেন কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ও নাটক। ইবসেনের নাটক অনুবাদেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে আছে ‘ক্রান্তিকাল, সাহিত্য ঐতিহ্য মূল্যবোধ, বাঙালির জাতীয়তাবাদ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, সাহিত্য ও স্বাধীনতা, ভাষা আন্দোলনের আদিপর্ব, নিঃসঙ্গচেতনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, চেতনার অ্যালবাম ও বিবিধ প্রসঙ্গ। সাহিত্যে ১৯৯৭ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৭ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।